রণবীর মুখোপাধ্যায় — সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ জটিলতার জেরে এক দুর্গাপুজোর সময় বাংলা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রতন টাটা। কি অদ্ভুত সমাপন, ১৮ বছর পর সেই দুর্গাপুজোতেই দুনিয়া ছেড়ে চিরতরে চলে গেলেন।
টাটা গোষ্ঠীর তরফে এক বার্তায় জানানো হয়েছে, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে রতন নভল টাটাকে বিদায় জানাতে হচ্ছে। তাঁর নেতৃত্বে শুধুমাত্র টাটা সংস্থাকে এগিয়েই নিয়ে যায়নি, দেশের প্রগতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সংস্থার কাছে রতন টাটা শুধুই চেয়ারম্যান ছিলেন না, ছিলেন পথ প্রদর্শক। উৎকর্ষতার প্রতি একনিষ্ঠতা এবং নতুনের সন্ধানে তাঁকে উন্নতির সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে দিয়েছে।
১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর মুম্বইয়ে পারসিক পরিবারে জন্ম রতন টাটার। বাবা নভল টাটার জন্ম গুজরাতের সুরাটে। পরে টাটা পরিবার তাঁকে দত্তক নেয়। রতন টাটার মা সুনি টাটা আবার সরাসরি ভাবে জামশেদজি টাটার পরিবারের অংশ। রতন টাটার পিতামহ হরমসজি টাটা জন্মসূত্রেই ওই পরিবারের সদস্য। রতন টাটার যখন ১০ বছর বয়স, সেই সময় তাঁর মা-বাবা আলাদা হয়ে যান। রতন টাটার নিজের এক ভাইও রয়েছেন, জিমি টাটা। সৎভাই নোয়েল টাটা। নভল টাটা দ্বিতীয় বার বিয়ে করেন সিমন টাটাকে। নোয়েল তাঁদেরই সন্তান।

1962 সালে টাটা স্টিল বিভাগে তাঁর কর্মজীবন৷ 9 বছর পর তিনি ন্যাশনাল রেডিও অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি লিমিটেডের ডিরেক্টর-ইন-চার্জ হিসেবে নিযুক্ত হন। 1991 সালে টাটা সন্সের চেয়ারম্যান পদ থেকে জেআরডি টাটা পদত্যাগ করলে রতন টাটা তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে স্থলাভিষিক্ত হন। টাটা সন্স-এর চেয়ারম্যান পদে ৭৫ বছর বয়েসের উর্ধে কেউ বসবেন না, এই নিয়ম রতন টাটাই চালু করায় তিনি ২০১২ সালে অবসর নেন।
শিল্প দুনিয়ায় সফল উদ্যোগপতি ব্যক্তিগত জীবনে প্রেমেতে ব্যর্থ। কান পাতলে শোনা যায় বলিউড অভিনেত্রী সিমি গ্রেওয়ালের সঙ্গে চর্চিত প্রেম কাহিনি। এমনকি অমিতাভ অভিনীত ফিল্ম এইতবারে লগ্নি করেও লাভ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর হাসপাতালে রুটিন চেক আপ করতে এসে ভর্তি হন টাটা। এরফলে তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। সোস্যাল মিডিয়ায় নিজে পোস্ট করেও শেষরক্ষা হলো না। মুম্বইয়ে ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন অকৃতদার শিল্পপতি।