রণবীর মুখোপাধ্যায় — “হাঙ্গার স্ট্রাইক আপ টু হসপিটালাইজেশন, হাঙ্গার স্ট্রাইক নট আনটিল ডেথ” আইনজীবী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যে অনশন কর্মসূচি উত্তাল। শাসকদলের আই টি সেলের সম্পাদক আরো এক ধাপ এগিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় এই অনশনকারী চিকিৎসকদের কদর্য ভাষায় আক্রমণ করেছেন।
মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে সব মেডিক্যাল কলেজে ১২ঘণ্টার প্রতীকী অনশন। অনশনের ডাক দিয়েছে জুনিয়র ডক্টরস নেটওয়ার্ক। সেই অনশনকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে কুৎসার রাজনীতি। বিদ্রুপ করা হয়েছে মমতার ধর্মতলার ২৬ দিনের অনশনকে।

সিপিআইএম মতাদর্শী অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রর প্রতিক্রিয়া “আমি শুনেছি উনি ২৬ দিন অনশন করা অবস্থায় দামি চকলেট খেতেন, কারন অনশন করলে কারো ১০ কেজি ওজন বাড়তে পারে না। ওই ভাবে ২৬ দিন অনশন করা যায় না”।
কল্যাণের দম ধরে রাখা মন্তব্যকে কটাক্ষ করে আন্দোলনকারী ডাক্তার দেবাশীষ হালদার বলেন “এখানে কেউ চকোলেট স্যান্ডুইচ খেয়ে অনশন করছেন না, অনশন করলে কি শারীরিক পরিবর্তন আসে তা ডাক্তার হিসেবে ওনার থেকে ভালো জানেন। সরকারের আসল উদ্দেশ্য আন্দোলনরত ডাক্তাররা অনশন করে মারা যাক যাতে অনৈতিক কাজে হস্তক্ষেপ না করতে হয়”।

বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ অরিন্দম বিশ্বাস জানিয়েছেন “শরীরের মধ্যে খনিজ পদার্থ অর্থাৎ সোডিয়াম পটাশিয়াম ও ক্লোরাইডের ঘাটতি হলে দুর্বলতা দেখা যায়। একটানা ৪৮ ঘণ্টার বেশি অনশনে থাকলে শরীরে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। গ্লুকোজ কমে গেলে মূলত ব্রেন, হার্ট ও লিভারের উপর পড়ে। দীর্ঘ দিন ধরে অনশন ব্যক্তির লাইফস্টাইল ও শারীরিক পরিকাঠামোর উপর নির্ভর করে। কেউ ১দিনও পারেন না, কেউ ৫০ দিনও পেরেছেন”।
এদিকে কংগ্রেস মুখপাত্র ও আইনজীবী অনিন্দ্য রায় চৌধুরী চকোলেট স্যান্ডুইচ বিতর্কে না গিয়ে ডাঃ বিশ্বাসের ক্লিনিক্যাল ব্যাখ্যার সঙ্গে সহমত পোষণ করেন। তার বক্তব্য “অনেকদিন না খেয়ে থাকলে পেটে গ্যাস হয়। সেই গ্যাস শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে শরীরকে ভারী করে দেয়। ফলে ওজন বাড়াটাই স্বাভাবিক”।

এখন দেখার মুখ্যমন্ত্রী তাঁর রাজনৈতিক জীবনের অনশনকে মাথায় রেখে জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনে ‘বড়দিদি’র ভূমিকা পালন করেন কিনা।